প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নের জন্য ‘যথাসাধ্য’ চেষ্টা করলেও ‘এক শ্রেণির’ মানুষের কারণে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
শুক্রবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের অনেক চেষ্টা করছেন। কিন্তু তার আশপাশে থেকে অনেক ক্ষতি করছে। সেটা প্রধানমন্ত্রীকে দেখিয়ে দেওয়া উচিত।
“দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়ে যাওয়া হলেও তাদের কিছু হচ্ছে না। অধিকন্তু তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। ৩৬ হাজার কোটি লুটের পরেও যারা এজন্য দায়ী ও দায়িত্বশীল তারা এখনও বহাল তবিয়তেই আছেন।
“কেউ কেউ আছেন যারা বলছেন, এই ৩৬ হাজার কোটি টাকা কিছুই না। প্রকারান্তরে তারা লুটেরাদের পাহারাদারের ভূমিকা পালন করছেন।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সরিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমলা নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ করে তার সমালোচনা করেন অধ্যাপক ফরিদ।
অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাতের লেখা ‘বাংলাদেশে দারিদ্র্য-বৈষম্য-অসমতার কারণ-পরিণাম ও উত্তরণ সম্ভাবনা: একীভূত রাজনৈতিক অর্থনীতির তত্ত্বের সন্ধানে’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ।
তিনি বলেন, “বেতন কমিশনের মাধ্যমে যেভাবে সবার বেতন বাড়লো, এমন উদাহরণ পৃথিবীতে বিরল। সরকার সেটাকে নিজের জন্য কাজে লাগাতে পারত, কিন্তু আমলাদের কারণে তা হয়নি। বরঞ্চ বেতন স্কেলের পর এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যাতে সব পক্ষ থেকে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটেছিল।”
প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার পাশাপাশি গ্রাম-শহরে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য দূর করতে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক ফরিদ বলেন, “গড় হিসাবে জিডিপি ও মাথাপিছু আয় বাড়লেও ৩২ মাত্রার বৈষম্য এখনও থেকে গেছে। অর্থনীতির উন্নয়ন হয়েছে।
“কিন্তু লুটেরা শ্রেণির দুর্বৃত্তায়নের মধ্যে পড়ে আছি আমরা। এ কারণে যেভাবে এগিয়ে যাওয়ার কথা সেভাবে এগিয়ে যেতে পারছি না।”
অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আশরাফ উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, অর্থনীতিবিদ কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, অধ্যাপক অজয় রায়, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ-ই-মাহবুব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপান স্টাডি সেন্টারের অতিথি শিক্ষক অধ্যাপক সাই কুরাসাওয়া, নাট্যজন মামুনুর রশিদ বক্তব্য দেন।